মাহমুদ আহমাদিনেজাদ—ইরানের সাবেক রাষ্ট্রপতি, এক বিতর্কিত অথচ নির্ভীক নেতা। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি দেশটির প্রতিরক্ষা ও পরমাণু কর্মসূচিকে আড়াল করে নিয়ে যান এক দুর্ভেদ্য পর্দার আড়ালে। ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি থেকে শুরু করে গোপন পারমাণবিক গবেষণা—সবকিছুতেই ছিল তাঁর দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ। তাঁর শাসনামলেই ইরান স্টিলথ প্রযুক্তিতে দক্ষতা অর্জন করে, এমনকি মার্কিন স্টিলথ ড্রোনকে ভূপাতিত করে শুরু হয় রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সাহসী অধ্যায়। এটি ছিল প্রযুক্তিগত দিক থেকে ইরানের এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কয়েক বছর আগেই আহমাদিনেজাদ বিস্ফোরক দাবি তোলেন—ইরানের অন্যতম প্রভাবশালী সংগঠন কুদস ফোর্সে মোসাদ অনুপ্রবেশ করেছে। এই সাহসী বক্তব্যের ফলস্বরূপ তাঁকে গৃহবন্দী করে ফেলা হয়। অবশেষে, নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি হাসান নাসরুল্লাহ ও ইসমাঈল হানিয়াকে ব্যক্তিগত দূত পাঠিয়ে সর্তক বার্তা পৌঁছে দেন। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর, তাঁকে খোমেনী প্রশাসনের আরও কঠোর নজরদারির মুখে পড়তে হয়। ব্যক্তিজীবনে আহমাদিনেজাদ ছিলেন একেবারে সাদাসিধে। রাজধানীতে একতলা একটি ছোট্ট বাড়িই ছিল তাঁর সম্বল। মেয়ের বিয়েতে আপ্যায়ন ছিল খেজুর আর সহজাত আতিথেয়তায় ভরা। তবে তাঁর শাসনামলে একটি নীতি ছিল নির্দয়—মোসাদের কোনো গুপ্তচর শনাক্ত হলেই, কোনো রকম দয়া ছাড়াই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হতো, যেনো বিশ্বাসঘাতকেরা বুঝে নেয় তাদের ভাগ্য কী হতে পারে। আজ, অনেক বিতর্ক ও বিরোধের পর, তাঁর সেই কথাগুলোই সত্য বলে প্রতিভাত হচ্ছে—মোসাদ ইরানের গভীরে প্রবেশ করে আসন পেতেছে। ইতিহাস যেন বলছে, আহমাদিনেজাদ ভুল বলেননি।